Chrome-এ আপনার নিজস্ব স্পেস
বাস্তব জীবনের প্রয়োজন কীভাবে Chrome ব্রাউজারে নতুন উদ্ভাবনের প্রেরণা দিয়েছে। Google Safety Engineering Center-এর স্যাবাইন বোরসে ও ডেভিড রজার, Chrome-এর নতুন প্রোফাইল ফিচারে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে বলেছেন।
প্যারিসে Google-এর সফ্টওয়্যার ডেভেলপার ডেভিড রজার বলেন “কিছু সময় ধরে আমার সম্পূর্ণ পরিবার একটি শেয়ার করা কম্পিউটারেই Chrome ব্রাউজার ব্যবহার করছে,”। “কখনও কখনও একই সময়ে ৫০টি ওয়েবসাইট পর্যন্ত খোলা থাকে। যেমন, সম্প্রতি দেখা কোনো YouTube ভিডিও খোঁজার সময় আমি সার্চ ইতিহাসে Minecraft ভিডিও ক্লিপও দেখতে পাই – এতে খুবই অসুবিধা হয়।” ডেভিড ছাড়াও আরও অনেক মানুষ আছেন, যাদের এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পরিবারের সবার পক্ষে একটি কম্পিউটারে একই Chrome ব্রাউজার ব্যবহার করা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির সময়েই এমন ঘটতে দেখা গেছে। মা-বাবা, বাচ্চা, আর দেখাশোনা করা ব্যক্তি একই সময়ে কিছু পড়ছে, রিসার্চ করছে এবং বিনোদনের বিভিন্ন সোর্স খুঁজে চলেছে। ব্যক্তিগত সেটিংস হারিয়ে ফেললে বা ভিন্ন ভিন্ন খোঁজার ইতিহাস একসাথে মিশে গেলে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
“নতুন আইডিয়া সাধারণত এমন মানুষের কাছ থেকেই আসে, যিনি প্রোডাক্ট নিজে ব্যবহার করে দেখেছেন।”
ডেভিড রজার, সফ্টওয়্যার ডেভেলপার।
স্যাবাইন বোরসে ডেভিড রজারের সমস্যাটি সঠিকভাবে বুঝতে পারেন। তিনি মিউনিখে গোপনীয়তা ও ইন্টারনেট নিরাপত্তা সম্পর্কিত Google-এর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, Google Safety Engineering Center (GSEC)-এর প্রোডাক্ট ম্যানেজার। তিনি এই নির্দিষ্ট সমস্যার ব্যাপারে GSEC-এর 'টেক ডেজ' ইভেন্টে আলোচনা করেন। এটি এই কারণেই আয়োজন করা হয় যাতে ক্রস-ফাংশনাল টিম বিভিন্ন ধরনের রোমাঞ্চকর চ্যালেঞ্জে একসাথে কাজ করতে পারে। এমনই একটি দিনে ব্যক্তিগত Chrome প্রোফাইল তৈরি করার ভাবনা জন্ম নিয়েছিল। এই ফিচার এখন Chrome-এ উপলভ্য এবং এটি প্রতি ব্যবহারকারীকে একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল তৈরি করতে দেয় যা ব্রাউজার খোলার সময় প্রতি বার তাকে বেছে নিতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ও বুকমার্ক পরিবর্তন করতে পারবেন এবং পাসওয়ার্ড স্বতন্ত্রভাবে সাজানো ও সেভ করা যাবে।
সবচেয়ে প্রারম্ভিক ভাবনা থেকে চূড়ান্ত প্রয়োগ পর্যন্ত Chrome প্রোফাইল ডেভেলপ করার প্রক্রিয়াকে আরও গভীরভাবে জানার ব্যাপারে অনেকে আগ্রহী হতে পারেন। স্যাবাইন বোরসের মতো প্রোডাক্ট ম্যানেজার, Chrome ব্রাউজারের মতো কোনো নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশনেই প্রতি দিন কাজ করে চলেছেন। স্যাবাইন বলেন “আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কীভাবে Chrome-কে আরও উন্নত করা যায় তার ব্যাপারে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। আমরা এও ভাবি যে কোন ধরনের সমস্যার আমাদের সমাধান করতে হবে এবং কীভাবে আমরা সেইসব সমাধানকে একত্রিত করতে পারি”। ডেভিড রজার তার কথায় সম্মতি জানিয়ে বলেন “আমাদের জীবনে প্রতিদিন যেসব সমস্যার সম্মুখীন হই, তার উপর ভিত্তি করেই বেশির ভাগ কাজ করে থাকি”। “Google-এ আমাদের বেশির ভাগ প্রোজেক্টই এইভাবে শুরু হয় এবং সাধারণত প্রোডাক্ট ব্যবহার করে দেখেছেন এমন মানুষদের থেকেই আমরা নতুন ধারণা পাই।
Chrome প্রোফাইলে কাজ করার অনুমতি পাওয়ার পর স্যাবাইন বিভিন্ন বিভাগ থেকে দশ জন মানুষকে বেছে নিয়ে একটি টিম তৈরি করেন, যার মধ্যে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতার বিশেষজ্ঞ ও ডেভিড রজারের টিমের ডেভেলপারও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ডেভিড দশ বছরেরও বেশি সময় জুড়ে Chrome ডেভেলপ করার কাজ করে চলেছেন এবং ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন করা সহ বিভিন্ন প্রোজেক্টের সাথে যুক্ত থেকেছেন। তার টিম Chrome প্রোফাইলের একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করেছিলেন যা বিশেষভাবে বেছে নেওয়া ব্যবহারকারীদের গ্রুপের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল।
এই সময়ের মধ্যে, এমন মানুষজনের কোনো গ্রুপকে শনাক্ত করতে, ব্যবহারকারীর সম্পর্কে রিসার্চ করা বিশেষজ্ঞের সাথে স্যাবাইন কাজ করেন, যারা তাদের কর্মস্থলে ও অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাথে ব্যক্তিগত স্তরে Chrome ব্যবহার করেন। “আমরা সেইসব ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা জানতে তাদের মুখোমুখি ইন্টারভিউ নেওয়া ছাড়াও, দু'মাসের জন্য কীভাবে Chrome প্রোফাইল ব্যবহার করেছেন, সেই সম্পর্কিত তথ্যও ডায়রিতে লিখে রাখতে বলা হয়েছে।" প্রোফাইল টিম তাদের থেকে এটাও জানতে চান যে অ্যাপ্লিকেশনের কোনো অংশ বুঝতে না পেরে তারা কী করেছিলেন।
“আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কীভাবে Chrome-কে আরও উন্নত করা যায় তার ব্যাপারে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।”
স্যাবাইন বোরসে, প্রোডাক্ট ম্যানেজার
এদিকে প্যারিসে, ডেভিড Chrome Beta ব্যবহারকারীর থেকে প্রাপ্ত ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখেন। Chrome Beta ব্যবহারকারীরা অন্য ব্যবহারকারীদের তুলনায় নতুন ফিচার আগে ব্যবহার করে দেখতে পারেন এবং প্রোডাক্ট ডেভেলপ করার প্রয়োজনে Google-কে তার ব্যবহারের ডেটা জমা দেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি দিতে পারেন। অসংখ্য Chrome Beta ব্যবহারকারীর থেকে একত্রিত করা তথ্য Chrome প্রোফাইলের সামগ্রিক উন্নতিতে সাহায্য করে। যেমন, কিছু মানুষের কোনো নির্দিষ্ট বোতামে ক্লিক করতে সমস্যা হয়েছে, যেখানে অন্য ব্যবহারকারী হয়ত কোনো ব্যাখ্যা বুঝতে পারেননি। ডেভিড বলেন যে এই ধরনের মতামতের উপর নির্ভর করে প্রোডাক্টে বিভিন্ন পরিবর্তন ও উন্নতি করা যেতে পারে এবং একই সাথে ডিজিটাল প্রোডাক্ট ডেভেলপ করার সময় প্রায়ই প্রক্রিয়ার ধাপগুলোকে বারংবার অনুসরণ করা হয়। ব্যবহারকারীকে একটি প্রোটোটাইপের অ্যাক্সেস দেওয়া হয় এবং সম্ভাব্য সমস্যার ব্যাপারে ব্যবহারকারী নিজের মতামত জানান। ডেভেলপার তখন প্রোডাক্টে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে আরও একবার পরীক্ষা করে দেখার জন্য জমা দেন।
স্টার্ট হওয়ার সময় Chrome ধীরগতিতে চলার মতো নির্দিষ্ট কোনো সমস্যা টেস্টিংয়ের সময় ফ্ল্যাগ করা হয়। এর পরে, ডেভিড তার সব ডেভেলপারকে হ্যাকাথন ইভেন্টের জন্য ডাকেন। “আমরা পুরো সপ্তাহ ধরে ব্রাউজারের স্পিড আরও বাড়াবার জন্য সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে চেষ্টা করেছি।” এর জন্য টিম বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য উপায়ও খতিয়ে দেখেছে। “পরিশেষে, আমরা বেশ কয়েকটি আলাদা আলাদা প্রযুক্তি শনাক্ত করি যা মিউনিখে আমাদের সহকর্মীদের দেখাই,” ডেভিড আরও বলেন।
প্রোজেক্টের এই পর্যায়ের সাথে সম্পর্কিত মজার ঘটনার স্মৃতি স্যাবাইন শেয়ার করেছেন। “এটি এমনই একটি সময় যখন আমরা একটি স্টার্ট-আপের মতো কাজ করেছি। আমরা অনেক বিষয় ব্যবহার করার চেষ্টা করি, প্রতি দিন একে অপরের সাথে কথাবার্তা বলি এবং সবচেয়ে সেরা সমাধান খোঁজার চেষ্টাও চলতে থাকে।" সম্প্রতি আলাদা আলাদা Chrome প্রোফাইল ব্যবহার করার সুবিধা চালু করা হয়েছে, কিন্তু স্যাবাইন বোরসে ও ডেভিড রজারের নের্তৃত্বাধীন টিমের করার জন্য এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তারা ব্যবহারকারীর মতামত এবং আরও উন্নত করার সাজেশনের উপর ভিত্তি করে প্রোডাক্টের উপর কাজ করা চালিয়ে যাচ্ছেন। এইসব ব্যবহারকারীর মধ্যে ডেভিডের পরিবারের সদস্যরাও আছেন, যাদের কাছে অবশ্যই এখন ব্যক্তিগত Chrome প্রোফাইল রয়েছে।
ফটো: স্টেফানি ফিউসেনিচ (৪), ফ্লোরিয়ান জেনেরটজকি (৩)।
সাইবার সুরক্ষা উন্নত করা
বিশ্বের অন্য কারোর তুলনায় আমরা কীভাবে অনলাইনে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষকে নিরাপদ রাখি তা জানুন
আরও জানুন